বাটোয়ারা আইন ও আলোচনা। Partition বন্টননামা দলিল আইন

 বাটোয়ারা আইন ও আলোচনা

বাটোয়ারা: কোন স্থাবর বা অস্থাবর আইনানুসারে প্রাপ্য অংশ নিজেরা আপোষমুলে বা শালিসের মাধ্যমে বা আদালতের মাধ্যমে ভাগ বন্টন করে নেয়াই হচ্ছে বাটোয়ারা। মুসলিম আইন তথা ফরায়েজ অনুযায়ী এচমালী সম্পত্তি সহ শরীকগনের মধ্যে সরসে নিরসে ভাগ বন্টন করে নেয়ার নাম বাটোয়ারা। অর্থাৎ যৌথ সম্পত্তি পৃথক ভোগ দখলে রুপান্তর ঘটানো।


 

            জমি বাটোয়ারার নিয়ম

বাটোয়ারা আইনের সাধারন বিষয় এবং হাইকোটের বিভিন্ন রুলিং:

বাটোয়ারা একটি অধিকার: এজমালী সম্পত্তির একজন সহ-মালিক অধিকার হিসাবে সেই সম্পত্তির বাটোয়ারা দাবি করতে পারে।যদি কোন সহ-মালিক তাদের যৌথ সম্পত্তির অন্যান্য সহ-মালিকের নিকট সম্পত্তির সৌহার্দপূর্ণ বন্টন দাবী করে এবং কোন সহ-মালিক যদি তা দিতে অস্বীকার করে, বন্টন দাবীকারী সহ-মালিক তখন আদালতে বাটোয়ারার নিমিত্তে মামলা রজু করতে পারবে। কেননা অন্যান্য সহ-মালিকদের বিরুদ্ধে এটি তার অধিকার।(এ আই আর 1954 এস সি 575) বাটোয়ারা মোদ্দমা দায়েরের আগে সহ-শরীকাদের উত্থিত অপরাপর সহশরীকদারকে মৌখিক বা লিখিতভাবে অবহিত করা যে, সে তার  প্রাপ্য হিস্যা অনুযায়ী যৌথ বা এজমালী সম্পত্তির অংশ পৃথকীকরনের জন্য মোকদ্দমা দায়ের করতে যাচ্ছে। তবে সে যদি তা না করে সে জন্য বাটোয়ারা মোকদ্দমা দায়েরে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে না।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে বাটোয়ারা: ব্যাপক অর্থে বাটোয়ারা এক ধরনের হস্তান্তর বটে। কেননা এতে একই স্বত্ব বিভিন্ন অংশে বিভক্তি তথা বিনিমময় হয়। তবে, সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের 118 ধারা মোতাবেক কোন যৌথ সম্পত্তির বোটেয়ারা হস্তান্তর নয়। (10 সি এল জে 503,20 সি 210)। বাটোয়ারা সম্পত্তি হস্তান্তরের সাথে সম্পৃক্ত নয়। (49 সি ডব্লু এন 759 ও 779, 1950 বোম্বে 247) 

 

বাটোয়ারায় পথাধিকার: কোন  বিরুদ্ধে পথাধিকার প্রকাশ বা সুপ্ত মনোভাব না থাকলে সে ক্ষেত্রে নিজ নিজ ভোগাধিকার অনুযায়ী পথাধিকার সুবিধা প্রদেয়, যদি তা অব্যাহত এবং আবশ্যিক বলে প্রতীয়মান হয়। (14 বোম্বে 452,14 সি 797,26 সি 516 সি এল জে 406)।
দখলকারকে বহিস্কার সংক্রান্ত: একজন সহ-শরীকাদার যদি কোন যৌথ সম্পত্তির সুনির্দিষ্ট অংশে দখলদার থাকে তবে সে সম্পত্তি বন্টন ব্যতীত তাকে বহিস্কার করা যায় না।
সহ মালিকের একচ্ছত্র দখল: কোন যৌথ সম্পত্তির একটি সুনির্দিষ্ট অংশের সম্পত্তির একটি সুনির্দিষ্ট অংশের একজন সহ মালিক  যদি একচ্ছত্র দখলকার হয়ে থাকে, তবে সেক্ষেত্রে অন্যান্য সহ-অংশীদারকে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। তানাহলে বাটোয়ারার মাধ্যমে তা সরসে নিরসে বন্টন পূর্বক তার মিমাংসা করতে হয়। সাধারণ নিয়ম এটাই যে, সরস নিরস বোটোয়ারা ব্যতীত কোন সহ অংশীদার যৌথ সম্পত্তির কোন অংশের একচ্ছত্র দখলকা্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। (1960) 12 ডি এল আর 708)।একজন ক্রেতা যদি কোন যৌথ সম্পত্তির একটি সুনির্দিষ্ট অংশ ক্রয় করে তবে উক্ত সম্পত্তি বাটোয়ারা না হওয়া পর্যন্ত সে সেটার দখল অধিকার পেয়ে থাকে। (1959) 12 ডি এল আর 708।
বিয়ের কারনে পৈত্রিক ভিটায় বোনের দখল: কোন এজমালী সম্পত্তির অংশ হিসাবে পৈত্রিক ভিটায় অবস্তিত কোন গৃহ বা কুটিরে বিবাহের আগ পর্যন্ত বোন সহ-অংশীদার থাকে, উক্ত বোনের অন্যত্র বিবাহ হয়ে গেলে সে আগন্তক হিসাবে বিবেচিত হয়। তাই সে উক্ত পৈত্রিক ভিটায় অবস্তিত গৃহ বা কুটিরের কোন একচ্ছত্র অংশ দাবী করতে পারে না। এ কারনে বাটোয়ারা মোকদ্দমা বিষয়টি সেভাবে বিবেচনা করা হয় না। এ জন্য যে এতে বিরোধ বা বিবাদ বৃদ্ধি পাবে। (1961) 13 ডি এল আর 230।
বাটোয়ারার পর পরিত্যক্ত সম্পত্তি বাটোয়ারা: কোন্ এজমালী সম্পত্তি বাটোয়ারার পর যদি উক্ত বাটোয়ারার বাইরে কোন যৌথ সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে, তবে তা বাটোয়ারার জন্য পরবর্তী মামলা দায়েরে কোন বাধা নেই। (28 সি ডব্লু এন 181;17 সি ডব্লু এন 521;39 সি জে এল 140)। বাদী ও বিবাদীর মধ্যে কোন যৌথ সম্পত্তি থেকে তা বাটোয়ারা করা যাবে এবং এ থেকে কোন অংশে বাটোয়ারা বহির্ভূত থাকে, পরে তা বাটোয়ারাতে কোন প্রতিকুলতা থাকে না।
কোন সহশরীক ইমারত সির্মানের মাধ্যমে সম্পত্তির উন্নয়ন সাধন করলে: কোন সহশরীক ইমারত নির্মানের মাধ্যমে সম্পত্তির উন্নয়ন সাধন করলে উক্ত সম্পত্তি বাটোয়ারার ক্ষেত্রে ইকুইটি নীতি অনুসৃত হয় এবং উক্ত সহ শরীককে উল্লেখিত অংশটুকু দেয়ার জন্য তাগিদ অনুভূত হয়।
বাটোয়ারায় নাবালক: আদালত কোন নাবালকের স্বার্থে বাটোয়ারা নাকচ করতে পারেন। বাটোয়ারা ন্যায্য হলে তা নাবালকের উপর কার্যকর। অন্যায় প্রমণ সাপেক্ষে একজন নাবালক কোন বাটোয়ারা ভঙ্গ বা অমান্য করতে পারে।
সহ-শরীক যদি বেদখল হন: বাটোয়ারা মোকদ্দমায় বাদী যেখানে দখলচ্যুত, সেখানে প্রতিকার বাটোয়ারা মোকদ্দমা ।

 

          বাটোয়ারা রেজিষ্ট্রী আইন

বাটোয়ারা রেজিষ্ট্রী: কোন যৌথ সম্পত্তি সাধারনত প্রথমত মৌখিক ভাবেই বাটোয়ারা হয়ে থাকে।যদি তা লিখিত কোন দলিল হিসাবে গৃহীত হয়।তাহলে তা অবশ্যই রেজিষ্ট্রী করতে হবে।কোন মৌখিক বাটোয়ারা সমযোতার যদি শর্ত থাকে তা লেখার পর প্রণীত দলিলটি রেজিষ্ট্রী করতে হবে। সেক্ষেত্রে উক্ত মৌখিক বাটোয়ারা রেজিষ্ট্রী না হওয়া পর্যন্ত কোন বাটোয়ারা কার্য্যকরযোগ্য নয় বা তা সেভাবে বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করবে না।

আরো পড়োন 

নামজারী অনলাইন আবেদন। ই-নামজারী?

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Next Post Previous Post